1. azadzashim@gmail.com : বিডিবিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :
  2. litonsaikat@gmail.com : neelsaikat :
শিরোনাম:
ছাত্রলীগের উখিয়া কমিটিতে নৌকা বিরোধী ইমনের নাম! নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গুপ্তচর সন্দেহে বিদেশি নাগরিক আটক! স্বাধীনতা দিবসে উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত উখিয়ায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস পালিত স্বাধীনতা দিবসে মরিচ্যা উচ্চ বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি উন্মোচন মহান স্বাধীনতা দিবসে উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের পুষ্পমাল্য অর্পণ স্থানীয় শিক্ষিত বেকারদের ডাটাবেজ তৈরির নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক উখিয়ায় আরো একশো পরিবার পেলো স্বপ্নের ঘর উখিয়ায় শিক্ষা অফিসারের অনিয়মের তদন্ত করলেন জেলা শিক্ষা অফিসার উখিয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা নিজেই করছে অভিযোগের তদন্ত

বায়ান্নের মিছিলে কিশোর মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম

  • Update Time : সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ২৭৯ Time View

অন্তিক চক্রবর্তী : মাতৃভাষা যখন নিতান্তই মাতৃমুখ হইয়া উঠে, তখন মা, ভাষা, এবং মাতৃভূমি এক হইয়া উঠে। এই লড়াইয়ের আখ্যান বাঙালির। মুক্তির আকাঙ্ক্ষা হইতে উদ্ভুত।

ভাষা আন্দোলনের উত্তাল স্মৃতিমাখা ফেব্রুয়ারী মাস এলেই স্মৃতির প্রকোষ্টে ভেসে আসে ভাষা শহিদদের নাম। সাতচল্লিশে দেশভাগের পরেই যখন বাঙালির ভাষার ওপর আঘাত এলো, তখন বুকের রক্ত ঢেলে লেখা হলো এক নতুন ইতিহাস। ভাষা আন্দোলনের সেই লড়াই থেকে সঞ্চিত শক্তিই পরবর্তীকালে যুগিয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের প্রেরণা। বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধে, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে, জাতির স্বকীয়তা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ভাষা আন্দোলন সবসময় আলোকবর্তিকার মত মূর্ত হয়ে ওঠে। এখনো জাতির যে কোনো ক্রান্তিকালে ভাষা আন্দোলন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ভাষা আন্দোলন জাতির বীরত্বপূর্ণ ঐতিহ্যের পরিচয় তুলে ধরে। ভাষা আন্দোলন তাই বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীক।
১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই রক্তঝরা ভাষা আন্দোলন তীব্রতর রূপ ধারন করেছিল। মাতৃভাষা বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার সংগঠিত দাবি ও আন্দোলনকে বানচাল করার জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম গুলি চালানো হয়েছিল। তাতে কয়েকটি অমূল্য প্রাণ সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিউর মৃত্যুবরণ করেছিলেন।

রাজধানী ঢাকার কথা বা বিভাগীয় শহরগুলোর কথা বাদ দিলে পূর্ববঙ্গের শহর-গঞ্জে ভাষা আন্দোলনের চাবিকাঠি ছিল স্কুলছাত্রদের হাতে। তারাই ধর্মঘট ও মিছিলের মাধ্যমে আন্দোলনের সূচনা ঘটায়।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকায় ছাত্র হত্যার খবরটি কুতুবদিয়ায় পৌঁছায় ২২ শে ফেব্রুয়ারি। তৎকালীন কুতুবদিয়া বড়ঘোপ হাই স্কুলের ৯ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত ছিলেন সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম।

কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ স্টীমার ঘাটে অবস্থানরত এ কে খান স্টিমারে থাকা সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকার মারফত ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকায় ছাত্র হত্যার খবরটি প্রথম জানতে পান মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম। তিনিই প্রথম নিজের উদ্যোগে বিদ্যালয়ের বড় ভাই এবং সহপাঠীদের জানান এবং সকলের সম্মতিতে নিজেই স্কুলের ঘণ্টা বাজিয়ে ক্লাস বর্জন ও প্রতিবাদে মিছিলে যোগদানের আহ্বান জানান বিদ্যালয়ের ছাত্রদেরকে।

সেদিনই (২২ ফেব্রুয়ারী) ঢাকায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে কুতুবদিয়াতে ক্লাস বর্জন করে তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে কুতুবদিয়া বড়ঘোপ উচ্চ বিদ্যালয় ও ধুরং হাই স্কুলের অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী।

“ভাষা আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিলো কুতুবদিয়া শিরোনামে”দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকায় দীর্ঘকাল আগে প্রকাশিত তরুণ গবেষক ও সাংবাদিক কালাম আজাদ কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ভাষা সংগ্রামী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন,

“১০ম শ্রেণির ছাত্র এসকে মকবুল আহমদ, শামসুল হুদা সিদ্দিকী, সিরাজুল ইসলাম এবং আমার নেতৃত্বে ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই, ‘খুনী আমিনের ফাসী চাই’ স্লোগানে একটি বিক্ষোভ মিছিল বর্তমান উখিয়া থানা কম্পাউন্ড প্রদক্ষিণ করে কুতুবদিয়া হাইস্কুলে এসে সমবেত হয়। পরে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এস কে মকবুল আহমদ, ৯ম শ্রেণির ফাস্ট বয় মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, আমি মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, ধুরং হাই স্কুলের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রমিজ উদ্দিন আহমদ, (পরবর্তীতে ধুরুং হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন কুতুবদিয়ায় সংঘটিত ঘটনায় পাকিস্তান সরকার কর্তৃক দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার ২০ নং আসামী), মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী, শামসুল হুদা সিদ্দিকী, ছালেহ আহমদ চৌধুরী (প্রাক্তন চেয়ারম্যান) প্রমুখ।

উক্ত সমাবেশে ছাত্র হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং রাষ্ট্রভাষা বাংলা আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করা হয়। ”

সেই সময় কুতুবদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জালাল আহমদ চৌধুরী শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট সহায়তা করেন বলে জানান প্রয়াত ভাষা সংগ্রামী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম।

বায়ান্নে ভাষার দাবীতে পথে নামা কিশোর মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের উদ্দীপনা ও সামষ্টিক চেতনায় ভাস্বর দেশপ্রেম।

’৬৬-র ছয়দফা, ’৬৯-র গণআন্দোলন, ’৭০ সালের নির্বাচন, সবশেষে ১৯৭১ সালের
মুক্তিযুদ্ধ,গণতন্ত্র,ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা, স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ,দেশাত্মবোধ ও মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনে সরব ও সাহসী লড়াই জারি রেখেছিলেন আমৃত্যু।

একুশ আমাদের চেতনার মূল সুত্র। একুশকে কেন্দ্র করেই এদেশের মাটি-মানুষের সংযোগ ও নৈকট্য গড়ে উঠেছে। বিশ্বায়নের এই যুগে আমরা ফিরে যাচ্ছি বৃহৎ বিশ্বের কাছে। বিশ্বও এখন আমাদের ঘরের ভিতরে। একে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের সবাইকে বিশ্বের নাগরিক হতে হবে। একুশের চেতনা ছাড়া এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। একুশের চেতনার মূল শক্তি মাটি, মানুষ, ভাষা ও ভাষার প্রতি ভালোবাসা।

রক্ত শিমুল তপ্ত পলাশ স্নাত সুনীল ভোরে প্রয়াতের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।

লেখক – বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ, কক্সবাজার।

তথ্যসূত্র : ভাষা আন্দোলনে কক্সবাজার।

Please Share This Post in Your Social Media

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।

More News Of This Category
© 2018 - 2020 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | dbdnews24.com
Site Customized By NewsTech.Com