।।জসিম আজাদ।।
১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে আমার জন্ম। ঠিক ঐ বছরই তৎকালিন এরশাদ সরকার উপজেলা পরিষদ গঠনের পর সমস্ত দাপ্তরিক কাজ সম্পাদন করে নির্বাচন আয়োজন করেন। এ নির্বাচনে আমার জন্ম উপজেলার সর্বস্থরের জনগণ প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তরুণ মাহমুদুল হক চৌধুরীকে উখিয়ার দায়িত্বভার অর্পন করেন। দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে উখিয়ার সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে ছিলেন। উখিয়ার কোন সেক্টর তাঁর নজরের বাইরে ছিল না। অবশ্যই এসব কথা আমাদের চেয়ে আশির দশকের যুবক বা বৃদ্ধারা খুব ভালই জানে। তারপরও শিক্ষা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ বেশ কিছু সেক্টরে তাঁর অবদান এখনো দৃশ্যমান।
আশির দশকের অনেক লোক পঞ্চাশোর্ধ এ লোকটি (মাহমুদুল হক চৌধুরী)’র জন্য এত পাগল কেন?
এ প্রশ্নের উত্তর পেতে অনেক বছর অপেক্ষা করেছি। অবশেষে হ্যামিলনের এ বাঁশিওয়ালা মাহমুদুল হক চৌধুরীকে আবিস্কার করলাম গত ২ বছরের একটু বেশি সময় হল। জানলাম তাঁকে এ অল্প বয়সে মানুষ কেন একটি উপজেলার দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
জনাব মাহমুদুল হক চৌধুরী আমার পাশের ইউনিয়নে বসবাস করলেও উনার সাথে আমার মেলামেশার সুযোগ হয়নি। তাই উনাকে জানার আগ্রহটা দীর্ঘদিন অতৃপ্তই রয়েছিল।
পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তিতে ‘গৌরবের-৭০’ উদযাপন করার কাজ শুরু করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। বেশ কিছু দিন পর হঠাৎ এসে আমার অগ্রজ ফরহাদ আমাকে প্রশ্ন করে এ বড় প্রোগ্রামের আহবায়ক তোমরা কাকে করবে? এমন একজন লোক বেঁছে নিও যে একাই প্রোগ্রামকে টেনে নিয়ে যেতে পারবেন। তখন থেকে লোক খোঁজা শুরু এবং এক সময় পেয়েও যাই। তবে ভয় ছিল একটা, তিনি যদি দায়িত্ব না নেন?
এরপর জনাব নুরুল হুদার পরামর্শে জনাব মাহমুদুল হক চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করি। তিনি খুবই আগ্রহ দেখালেন। ওই দিন রাত ৯টায় উনার আহবানে একটি মিটিং কল করার প্রেস রিলিস পাঠানোর বিষয়ে অনুমতির জন্য ভয়ে ভয়ে উনাকে জীবনের প্রথম ফোনটি করি। তিনি কল রিসিভ করেন। আমার পরিচয় দেওয়ার পর তিনি খুব স্বাভাবিক ভাবে আমার সাথে আলাপ করেন এবং অনুমতি দেন। পরের দিন মিটিং শুরুর ১ ঘন্টা আগে উনাকে মিটিং এর বিষয়ে জীবনের ২য় কলটি করতে আমার নাম সম্বোধন করে তিনি বলেন, তিনি ইতি মধ্যে মিটিং স্থলে চলে এসেছেন। আমার নাম সম্বোধন করা ও ১ ঘন্টা আগে মিটিং স্থলে চলে আসাটা আমাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করছেন। তখন উনাকে জানার ক্ষুদা আরো বেড়ে যায়।
২ বছর খুব কাছে থেকেছি। অনেক স্নেহ আদর পেয়েছি। ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কৌশল দেখেছি। মানুষকে মূল্যালয় ও সম্মান করা দেখেছি। আপ্যায়ন ও যোগাযোগ রাখার ধরন দেখেছি। দারুণ সময়ানুবর্তীতা দেখেছি। সব কিছুতেই তিনি অনন্য। উনার বিষয়ে আমার মনে জন্মানো সমস্ত প্রশ্নের জবাব আমি ইতি মধ্যে পেতে থাকলাম।
জনাব মাহমুদুল হক চৌধুরীর মত একজন সফল ব্যবস্থাপকের সাথে খুব কাছে গিয়ে মিশতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।
এ ফেসবুক ছাড়া অন্য কোথাও যদি লিখার সুযোগ হতো তবে আমি লিখতাম–
মাহমুদুল হক চৌধুরীই একজন সফল ব্যবস্থাপক।
এ মহা ব্যবস্থাপকের প্রতি কৃতজ্ঞ।
লেখক: সংবাদকর্মী।
মন্তব্য করুন