ডিবিডিনিউজ ডেস্ক :
গত ২৫ আগস্ট রোববার রোহিঙ্গা শরনার্থীদের সমাবেশের জন্য ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবারই অর্থাৎ সমাবেশের ৩ দিন আগেই ক্যাম্প ইনচার্জ-৩ এর নিকট ইংরেজিতে বিস্তারিত লিখে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। সে আবেদন ক্যাম্প ইনচার্জ শামিমুল হক পাভেল ২২ আগস্ট Seen (দেখেছেন) করেছেন। ক্যাম্প-৩ ইনচার্জ শামিমুল হক পাভেল তো একজন সরকারি কর্মকর্তা। রোহিঙ্গা সমাবেশের ৩ দিন আগে তিনি জানলে সরকার কেন তা জানেনা? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য!
খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আবদুল মোমেন, আরআরআরসি মোঃ আবুল কালাম এনডিসি (অতিরিক্ত সচিব) ও জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন সহ দায়িত্বশীল সকলেই বলেছেন রোহিঙ্গা সমাবেশের ব্যাপারে সরকার আগে থেকে কিছুই জানতো না। সমাবেশের কোন অনুমতিও দেয়া হয়নি। এ বিশাল সমাবেশ তো হঠাৎ করে হয়নি। দীর্ঘ সময় প্রস্তুতি নিয়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিচ এন্ড হিউম্যান রাইটর্স (এআরএসপিএইস) এর চেয়রাম্যান মাস্টার মোঃ মুহিব উল্লাহ’র সমাবেশের অনুমতি চেয়ে করা আবেদনে ৫ লাখ রোহিঙ্গা সমাবেশের আয়োজনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ৫ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ২ লাখ কুতুপালং থেকে, ২ লাখ বালুখালী ও থাইংখালী থেকে এবং টেকনাফ এরিয়া থেকে ১ লাখ রোহিঙ্গা শরনার্থী আগমনের কথা বলা হয়েছে। ৪ নম্বর এক্সটেনশন ক্যাম্পের খোলা মাঠে এ সমাবেশের জন্য ৫ শ’ রোহিঙ্গা ছাত্র কর্মী ও ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করবে বলে উল্লেখ আছে। ওপেন হিলে একটি স্টেইজ, ৫ টি হ্যান্ড মাইক ও ৪ টি বড় মাইক ব্যবহার, ২৪ আগস্ট থেকে ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড ব্যবহার, ২৫ আগস্ট সকাল ৯ টা দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এ সমাবেশ করা হবে বলে মাস্টার মুহিব উল্লাহ’র আবদেন উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও আবেদনে প্রথম পৃষ্ঠার সাথে যুক্ত ভিন্ন পৃষ্ঠায় সমাবেশের বিষয়ে আরো বিস্তারিত প্ল্যান উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে ৩ নম্বর ক্যাম্প ইনচার্জ শামিমুল হক পাভেল সমাবেশ করার অনুমতির আবেদন পাওয়ার পর Seen করা একটা স্বাভাবিক বিষয় হিসাবে উল্লেখ করে বলেন-সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন পাওয়ার সাথে সাথে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সেটা বিস্তারিত জানিয়েছি। পরে সমাবেশের কোন অনুমতিও দেয়া হয়নি।
একই বিষয়ে শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোঃ আবুল কালাম এনডিসি (অতিরিক্ত সচিব) সিবিএন-কে বলেন, বৃহস্পতিবার ২২ আগষ্ট রাত পর্যন্ত আমরা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এর পর দু’দিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ও শনিবার। রোববার ২৫ আগস্ট অনুমোদনহীন রোহিঙ্গা শরনার্থী সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদনের বিষয়টি পর্যালোচনা করারও তাঁরা কোন সময় পায়নি। তাহলে কি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নীরবে সমাবেশের মৌন অনুমতি দেয়া হয়েছিল কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে আরআরআরসি মোঃ আবুল কালাম এনডিসি (অতিরিক্ত সচিব) বলেন, সমাবেশের কোন ধরনের অনুমতি আমরা দেইনি, দেয়ার প্রশ্নই উঠেনা। তাহলে সরকার সমাবেশের বিষয়টা একেবারেই জানতেননা বলছে, যা তো সঠিক নয়-এ প্রশ্নের উত্তরে আরআরআরসি মোঃ আবুল কালাম এনডিসি (অতিরিক্ত সচিব) এবিষয়টা নিয়ে আর বেশী লেখালেখি না করার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ২৯ আগস্ট কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাসিক এনজিও সমন্বয় সভায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা ২৫ আগষ্ট অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা সমাবেশের অনুমতি ছিলো কিনা, তা জানতে চাইলে, জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন তার উত্তরে বলেন-২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা সমাবেশে কোন অনুমতি ছিলোনা। ২৫ আগস্টের রোহিঙ্গা সমাবেশে ৬৫ হাজার টি শার্ট সরবরাহ, শত শত ব্যানার, পোস্টার, হ্যান্ডবিল, ফেস্টুন, প্লেকার্ড ইত্যাদিতে চেয়ে যায়। এছাড়া সমাবেশে উপস্থিত হওয়া সবাইকে নতুন লুঙ্গি পরিহিত দেখা যায়।-সিবিএন
মন্তব্য করুন