নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে অবস্থান করা রোহিঙ্গা ডাকাতদের পাকড়াও এবং তাদের আস্তানা শনাক্ত করতে র্যাব হেলিকপ্টারযোগে চক্কর দিয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি সন্দেহজনক জায়গা নজরে এসেছে। ভবিষ্যতে ওইসব স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৫ এর লে. মির্জা মাহতাব। হেলিকপ্টার চক্করকালে পাহাড়ের পাদদেশের বিভিন্ন পয়েন্টে র্যাব-পুলিশ অবস্থান করছিল।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের (নং- ২৬) ঘেঁষা পাহাড়ে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়। এ সময় বিপুলসংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন ছিল।
সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা টেকনাফ উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসসহ ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়।
এদের কিছু বেপরোয়া দুষ্কৃতকারী রোহিঙ্গা মাদক, ডাকাতি, চুরি, হত্যা ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা আবদুল হাকিম ডাকাত ও রোহিঙ্গা সলিম ডাকাড বেশ দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠে।
বিশেষ করে টেকনাফের গহিন অরণ্যে আবদুল হাকিম ডাকাতের একাধিক আস্তানা রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। টেকনাফের ফকিরামুরাসহ গহিন বনের বিশাল এলাকায় গড়ে তুলেছে তার এই আস্তানাগুলো। এখানে তার বাহিনীর অন্তত অর্ধশত অস্ত্রধারী ক্যাডারেরও বসতি রয়েছে। কক্সবাজার ও টেকনাফ শহরের বিভিন্ন স্থানে আছে তার একাধিক সোর্স। পাহাড়ের কোন স্থানে হাকিম কখন অবস্থান করেন, তা এখনো কেউ জানে না। অরণ্যঘেরা পাহাড়েই হাকিম ডাকাত রাজার বেশে অবস্থান করে চালিয়ে যাচ্ছেন তার যত সব অপকর্ম। তার বিরুদ্ধে টেকনাফের আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলাসহ টেকনাফ থানায় হত্যা ৭টি, অপহরণ ৬টি, মাদক ২টি, ধর্ষণ ১টি, ডাকাতির ২টি মামলা রয়েছে।
অপরজন মো. সলিম ওরফে সলিম ডাকাত রাতারাতি হিংস্র হয়ে ওঠে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ স্থানীয়দের আতঙ্কের নাম সলিম ডাকাত। জাদিমুরা এলাকার যুবলীগ নেতা ওমরকে হত্যা করে দেশ-বিদেশে বেশ আলোচনায় আসে এই সলিম ডাকাত। গত কয়েক সপ্তাহ আগে তাদের একটি গ্রুপের হাতে সলিম ডাকাত নিহত হয়েছে বলে চাউর হয়। তবে এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এসব অপরাধী ডাকাতদের ধরতে র্যাব ও পুলিশ কয়েক দফা অভিযান পরিচালনা করে। শুধু তা-ই নয়, রোহিঙ্গা ডাকাতের আস্তানা চিহ্নিত করতে গত সপ্তাহে ড্রোন ব্যবহার করে কয়েকটি আস্তানা চিহ্নিত করে এবং তা আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে ধ্বংস করে দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গহিন পাড়াড়েও আস্তানা চিহ্নিত করতে এবং রোহিঙ্গা ডাকাতদের ধরতে হেলিকপ্টারযোগে চক্কর দেয় র্যাব-১৫।
র্যাব-১৫ টেকনাফ ইনচার্জ লে. মির্জা মাহতাব বলেন, গহিন পাহাড়ে হেলিকপ্টার চক্কর দিয়ে বেশ কয়েকটি সন্দেহজনক জায়গা নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে ড্রোন ব্যবহার করে কয়েকটি আস্তানা ধ্বংস করা হয়েছিল। তাছাড়া দুষ্কৃতকারীদের পাকড়াও করতে গোয়েন্দা নজর রাখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো অভিযান পরিচালনা করা হবে।
মন্তব্য করুন