ডিবিডিনিউজ২৪ রিপোর্ট :
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে অপরাধ কর্মকান্ড রোধে সরকার সম্প্রতি মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবা সীমিত করে দেয়। তবে মিয়ানমারের বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানির নেটওয়ার্ক সচল রয়েছে সীমান্তবর্তী উখিয়া-টেকনাফে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সে দেশের সিম দেদারছে ব্যবহার করছে রোহিঙ্গারা। আর সিম আনার সহজ রুট হিসেবে পুরো সীমান্তকে ব্যবহার করছে তারা।
জানা গেছে, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনীর খুন-নির্যাতন, মাদক সংশ্লিষ্টতা, প্রত্যাবাসনে রাজি না হওয়া এবং রোহিঙ্গাদের সমাবেশের মতো নানা ঘটনায় দেশব্যাপী বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এরপর শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সরকার বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের থ্রি-জি ও ফোর-জি ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক সীমিত করে দেয়।
উখিয়া কুতুপালং বাজার থেকে বিক্রি করতে আনা মিয়ানমারের এমপিটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির ২৩০টি সিমসহ মো. করিম নামের রোহিঙ্গা যুবককে গত বুধবার আটক করে পুলিশ। সে উখিয়ায় বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ এ আশ্রিত নুরুল আলমের ছেলে। উখিয়া থানার ওসি আবুল মনসুর তার বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানান।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর টেকনাফ স্থলবন্দরের প্রধান ফটকে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের সহায়তায় পুলিশ তিনজনকে মিয়ানমারেরর ‘এমপিটি’ নামের ২২২টি সিমসহ আটক করেছিল। আটকরা হলো মিয়ানমারের মংডু বড়ডেইল এলাকার নুরুল আলমের ছেলে নুর হাসান, টেকনাফের নয়াপাড়া মুচনী রোহিঙ্গা শিবিরের হোসেনের ছেলে সলিম ও উখিয়া জামতলী রোহিঙ্গা শিবিরের মেহের শরীফের ছেলে রবি আলম। তাদের বিরুদ্ধেও থানায় মামলা করা হয় বলে জানান টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র মতে, মিয়ানমার থেকে সুকৌশলে সিম আনা অব্যাহত রয়েছে। অনেক দিন ধরেই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সিম ব্যবহার করে আসছে।এসব সিমের নেটওয়ার্ক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন হওয়ায় সহজে উভয় দেশের সীমান্তের অনেক ভেতরে কাজ করছে। সচল রয়েছে মিয়ানমারের থ্রি-জি ও ফোর-জি ইন্টারনেট নেটওয়ার্কও।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ রোহিঙ্গা এ দেশীয় বিভিন্ন অপারেটরের অবৈধ সিম ব্যবহার করে আসছে। মাত্র ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বায়োমেট্রিক নিবন্ধন বা আঙুলের ছাপ ছাড়াই তারা স্থানীয় দোকান এবং অসাধু চক্রের কাছ থেকে কিনে নেয় সিম। এতে দিন দিন ক্যাম্পের নিরাপত্তা হুমকির দিকে ধাবিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অবৈধ মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা অপহরণ, খুন, ধর্ষণসহ মাদক চোরাচালানের মতো অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন