ডিবিডিনিউজ ডেস্ক : চীনের প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় ১০০ দেশে। বাংলাদেশেও তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে রোববার জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর)।
এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। তবে আতঙ্কিত না হয়ে এই পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা গুরুত্বপূর্ণ। চীনের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগের সবচেয়ে বড় প্রতিকার হচ্ছে সতর্ক থাকা। সতর্কতা বিষয়ে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে সেগুলো সাধ্যমত মেনে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
আক্রান্ত হওয়া সহজ নয়
১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে আক্রান্তের শারীরিক সংস্পর্শে আসলে বা আক্রান্তের কফ-থুতু গায়ে লাগলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রাস্তায় পার করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার কোনোও আশঙ্কাই নেই।
খুব সহজেই মোকাবিলা সম্ভব
কেবল ঘন ঘন হাত ধোয়ার মতো সহজ উপায়েই এই ভাইরাস মেরে ফেলা সম্ভব। সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হাতের দুই পৃষ্ঠ খুব ভালো করে ধুতে হবে। আঙুলের খাঁজ যাতে ভালোভাবে পরিষ্কার হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
করোনার উপসর্গ স্বাভাবিক জ্বর-সর্দির মতো
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস আক্রান্তের শারীরিক অসুবিধা সামান্য। স্বাভাবিক জ্বর-সর্দির মতো। হাঁচি-কাশি হলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সুস্থ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার হার একেবারে কম
আক্রান্তদের আড়াই শতাংশের কম মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকতে পারে। সুস্থ-সবল মানুষের আক্রান্ত বা ‘সংকটাপন্ন’ হওয়ার হার একেবারে কম। বলা হচ্ছে, এই রোগে যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা বা আগে থেকেই অন্য বড় রোগে তারা আক্রান্ত ছিলেন।
ল্যাব টেস্টে সংক্রমণ শনাক্ত সম্ভব
ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত করা সম্ভব। ভাইরাস শনাক্তের ১৩ দিনের মাথায় ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে এই ভাইরাস শনাক্ত করা গেছে। রটারড্যাম, লন্ডন এবং হংকংয়ের বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় বার্লিনের চ্যারিটি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের বিজ্ঞানীরা ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে করোনাভাইরাস শনাক্তের পথ খুঁজে পান।
কোয়ারেন্টিন পদ্ধতি কাজে আসছে
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের আলাদা করে রাখায় নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা কমছে। চীনের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদ্ধতিতে অনেক প্রদেশে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যতে এসেছে।
প্রয়োজন সঠিক পদক্ষেপ
সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই ভাইরাসের বিস্তার ভৌগোলিকভাবেই আটকানো সম্ভব। বিশ্বের বহু দেশে আক্রান্তরা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
গবেষণা চলছে
প্রাণঘাতী এই ভাইরাস নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা জনগণকে সতর্ক করতে নানা আর্টিকেল লিখছেন এবং তা জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
শিগগিরই প্রতিষেধক
চীনের উহানে ভাইরাসটি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে এর উৎস, প্রকৃতি ও সংক্রমণের ধরন শনাক্ত হয়েছিল। যেখানে এইচআইভি এইডসের ক্ষেত্রে সময় লেগেছিল দুই বছর। প্রতিষেধক টিকা উদ্ভাবনের কাজও অনেক দূর এগিয়েছে। চীনের গবেষকরা জানিয়েছেন, খুব শিগগির তারা করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে সুখবর দিতে পারবেন। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
মন্তব্য করুন