আলমগীর মাহমুদ :
ঝিলংঝা চৌধুরী পাড়া আরাকান রোডের সাথে লাগোয়া বুড়িরছরা জামে মসজিদ সংলগ্ন কুটিরই আমাদের বর্তমান ঠিকানা। উখিয়া রত্নাপালং কক্সবাজার ছিল আদিপুরুষের বসত। ১৯৯৪ সালে আগন্তুকের বেশে এসেই বসতি শুরু। কোন চেনা জানা, আত্নীয় স্বজনও নেই, এলাকাও ছিল আমাদের জন্য নুতন।
যাদের সাথেই পরিচয় চেনা জানা হতো প্রত্যেক পরিচিতিকে সম্পদ মনে করে গোলায় বর্ষার মজুতের মতই জমানো। সাথে ভালবাসায় লালন শুরু করি।
প্রতিবেশীর যেভাবে খবর রাখতে ধর্মে বলা আছে সে হক আদায়ে কায়মনে চেষ্টায় রইলাম। সে যে ধর্মেরই হউক। প্রতিবেশী প্রতিবেশীই।
ভালবাসায় ভালবাসা আনে। এক যুগ না পেরুতেই আমাদের ভালবাসার সাম্রাজ্য চৌধুরী পাড়া ছাড়িয়ে সিকদার পাড়ার প্রতি ঘরে ঘরেই ঘটাইল বিস্তৃত। আভিজাত্যের প্রতীক সিকদার এবং চৌধুরীদের ভালবাসার মানুষ হয়ে পড়লাম। আমাদেরও প্রাণপ্রিয়ের লিষ্টে উঠে গেল তাঁদেরই নাম।
শুকনা মাছের একবাটি রান্না তরকারি থেকে গাছে ধরা বর্ষের প্রথম ফলটিও ভালবাসার নির্দশনের মতো হতো বিনিময় ।
খালেদার মা। প্রতিবেশী। সত্তর ছুঁই ছুঁই বয়স। স্বামী রিকশার চালক, বর্তমানে অবসরে। উপার্জনের নেই নির্ভরশীল কেউ। টানাহেঁচড়ার সংসার। ভোরে শীতের চটকতা। উনি বাসার দরজায়। হাতে পলেথিনে মোড়ানো পুটলায় বরই( কূল) আমরা বিষ্ময়ে… আরে খালা। অসুস্থ শরীরে।
… গাছে বরই পেকেছে তোমাদের না দিয়ে কেমনে খাই! .. বরই নিয়ে এসেছি।
বোনঃ- অ..খালা ঘরে অনেক বরই এত কষ্টে তুমি অসুস্থ শরীরে কি দরকার ছিল বল। আমরা বরই খাচ্ছি না কোন দিন আছে।
খালাঃ- বেশ দরদমাখা ঢং এ কইতেই রইল বাজারে ফর্মালিন ছাড়া কি বরই আছে! আমারগুলো গাছের বরই ফর্মালিনছারা। তোরারল্লায় পরানত ন যার দ্দে..!১
ভালবাসার দিন কেন হবে ১৪ তাং একদিন্যা!! কামনাবাসনাহীন ভালবাসাতো ৩৬৫ দিনই। যেমনি এসেছিল আজ সকালে!
লেখক : বিভাগীয় প্রধান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, উখিয়া কলেজ।
alamgir83cox@gmail. Com
মন্তব্য করুন