ডিবিডিনিউজ ডেস্ক :
গত ২২ আগস্ট ছিলো রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের দ্বিতীয় দফে ব্যর্থ প্রক্রিয়ার দিন। এ প্রক্রিয়া যখন জোরেশোরে চলছে, তখন রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে কর্মরত দেশী-বিদেশী ৬১ টি এনজিও ‘একশন এইড’ নামক একটি আইএনজিও’র নেতৃত্বে একটি বিবৃতি প্রদান করে। বিবৃতিতে শতভাগ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে মিয়ানমারে ঠেলে না পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়। প্রত্যাবাসনের বিপক্ষে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এ বিবৃতিতে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের উত্থাপিত ৫ দফা দাবির অনুরূপ বক্তব্যই পরোক্ষভাবে উল্লেখ করা হয়। এই বিবৃতির বক্তব্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়। আন্তর্জাতিক মহল এ বিবৃতি পেয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে অনেক কিছু জানতে চেষ্টা করে। বিব্রত হয় সরকার। রোহিঙ্গা প্রশাসন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হন। প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকান্ড ও গত ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা শরনার্থী সমাবেশ নিয়ে সরকার বহুমুখী তদন্ত শুরু করেছে। এ তদন্তে বার বার উঠে আসছে একশন এইড এর নেতৃত্বে প্রদত্ত ৬১ এনজিও’র প্রদত্ত এ বিতর্কিত বিবৃতি। বিবৃতির মাধ্যমে এ ধরনের প্রত্যাবাসন বিরোধী উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতে পারেন কিনা, বিবৃতি দিয়ে এনজিও গুলো সরকারের সাথে সম্পাদিত শর্ত লঙ্গন করেছে কিনা, এনজিও গুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে কিনা, ইত্যাদি বিষয় এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এবিষয়ে বিবৃতির নেতৃত্বদানকারী আইএনজিও একশন এইড-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-সব এনজিও নয়, ৬১ এনজিও নিয়েই আমি কথা বলতে পারবো। তিনি বলেন-বাংলাদেশ সরকারের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই। আমরা প্রত্যাবাসন বিরোধীও নই। পূর্ণ নিরাপত্তা ছাড়া রোহিঙ্গাদের মতামতের বিরুদ্ধে মিয়ানমারে জোর করে ঠেলে দেওয়া উচিত হবেনা। রোহিঙ্গারা গরু-ছাগল নয়, তারাও মানুষ।
দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের ভরনপোষণ করার স্বক্ষমতা বাংলাদেশ সরকারের আছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে ফারাহ কবির বলেন, সেটা আমাদের বিষয় নয়, সরকারের বিষয়। তিনি আরো বলেন-আমরাও একসময় শরনার্থী ছিলাম, সে বিবেচনায় রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বিবৃতি দিয়ে এনজিও গুলো সরকারের সাথে সম্পাদিত শর্তের লঙ্গন করেছে কিনা-এ প্রশ্নের উত্তরে একশন এইড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, বিবৃতিতে আমরা খারাপ কিছু বলিনি। প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩২ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে ১৮৯ টি এনজিও এবং আইএনজিও কাজ করছে। তারমধ্যে, ৫৫ আইএনজিও এবং ১৩৪ টি এনজিও।
মন্তব্য করুন